Jonayed Hossain

banknotes, euro, paper money-209104.jpg

সরকার তো চাইলে যত ইচ্ছে টাকা ছাপাতে পারে, তাহলে ঋণ নেয় কেন?

-মোঃ জোনায়েদ হোসেন

কঠিন প্রশ্ন! আচ্ছা চলেন সহজ করে জেনে ফেলি 🙂

মনে করুন, আপনি একটা ছোট্ট দেশে আছেন। সেখানে শুধু আপেল পাওয়া যায়। একবছরে আপেল উৎপাদিত হয় ১০ কেজি। ঐ সরকার সে বছর মোট ১০০০ টাকা ছেপেছে। তাহলে ক্রয় করার মতো টাকা আছে ১০০০, পণ্য আছে ১০ কেজি। তাহলে প্রতি কেজি আপেল হবে ১০০ টাকা। সরকার যদি ১৫০০ টাকা ছাপাতো, প্রতি কেজি মানুষ কিনতে পারতো ১৫০ টাকা করে। অর্থাৎ টাকা বেশি থাকলে পণ্যের মূল্য বেড়ে যায়, টাকার মূল্য কমে যায়।

এটা একেবারে সহজ ব্যাখ্যা, অর্থনীতির ভাষায় একটা সমীকরণ আছে।
Quantity of Money Equation- MV=YP

এখানে,
M= Circulation of Money/ টাকা সরবরাহ
V= Velocity of Money/ টাকার লেনদেন
Y= GDP
P= পণ্যের মূল্য

(GDP হলো কোন একটি ভৌগোলিক সীমানায় এক বছরে উৎপাদিত পণ্য ও সেবার মোট পরিমাণ)

একটা নির্দিষ্ট সময়ে Velocity of money মোটামুটি একই থাকে। GDP ও হুট করে বেড়ে যায় না।

সেক্ষেত্রে টাকার সরবরাহ বেড়ে গেলে Price level বেড়ে যাবে অর্থাৎ মানুষের কাছে টাকা বেশি থাকলে মানুষ বেশি দামে পণ্য কিনবে। দেখা দেবে মূল্যস্ফীতি (টাকার বিপরীতে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়া বা টাকার অবমূল্যায়ন)।

আরেকটি উদাহরণ দিচ্ছি, জিম্বাবুয়ে সরকার মনে করলো টাকা ছাপিয়ে দেশের উন্নয়ন করে ফেলবে। তারা প্রচুর টাকা ছাপাতে লাগলো। কিন্তু পণ্য ও সেবার উৎপাদন বাড়েনি।

এরপর দেখা গেলো মানুষের হাতে অনেক টাকা। অন্যদিকে পণ্য ও সেবা আগের মতোই। স্বাভাবিকভাবে পণ্য ও সেবার দাম বাড়তে লাগলো। এবং বাড়তে বাড়তে একসময় এক বস্তা টাকা দিয়ে এক কেজি গোল আলু কিনতে হলো!

তাহলে প্রশ্ন হলো সরকার কত টাকা ছাপায়?
সরকারের উদ্দেশ্য দুটি,
এক-পণ্য ও সেবার বিনিময় যাতে স্মুথ থাকে।
দুই – টাকার মান যাতে কাঙ্ক্ষিত মানে থাকে।

এই টাকা ছাপানোর পরিমাণ নির্দিষ্ট না। সাধারণত ধনী দেশগুলো জিডিপির 2-3 শতাংশ এবং উন্নয়নশীল ও এলডিসি গুলো আরো কিছু বেশি পরিমাণ ছাপায়।

(আমি অর্থনীতির ছাত্র নই, আগ্রহ থেকে পড়ি; অর্থনীতির কেউ হয়তো আরো ভালো ব্যাখ্যা দিতে পারবে, আপনারাও চাইলে পড়তে পারেন)

☺ হ্যাপি লার্নিং

Share this Article:

Facebook
Twitter
LinkedIn