bitcoin, cryptocurrency, digital-2007769.jpg

ক্রিপ্টোকারেন্সি-বিটকয়েন কী, কীভাবে কাজ করে?

-মোঃ জোনায়েদ হোসেন

আসেন সহজভাবে বুঝে ফেলি 🙂

আচ্ছা, আগে বলেন মুদ্রা বা টাকা কী?
– মুদ্রা হলো বিনিময়ের মাধ্যম। (Money is what money does./মুদ্রা যা করে তা ই মুদ্রা)
এর অর্থ হলো মুদ্রার কাজ বিনিময়ে সহযোগিতা করা।

একটা উদাহরণ দিই- মনে করেন দুই তিন হাজার লোক একটা দূর দ্বীপে আটকা পড়েছে। আসার কোন পথ নেই। নিরুপায় হয়ে, সেখানে বসবাস শুরু করেছে। তো এই লোকগুলোর একটা সমাজ হবে। এদের একেকজন একেকটা কাজে পারদর্শী। কেউ মাছ ধরবে, কেউ স্কুল চালাবে, কেউ গরু পালবে। মাছ ধরা ব্যক্তি, মাছের বিনিময়ে অন্য কিছু পেতে চাইবে, বা পরের জন্য সঞ্চয় করতে চাইবে।

ওখানে কোন টাকা নাই। ওরা একটা ছোট্ট ঘর বানিয়ে নাম দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই কেন্দ্রীয় ব্যাংক কতগুলো পাথর সংগ্রহ করে সেগুলোতে নম্বর দিল। পাথরগুলো মুদ্রা বা টাকা। এরপর সবাইকে বললো তোমাদের কাছে থাকা সোনা/রূপার বিনিময়ে পাথর মুদ্রা নিয়ে যাও। (আবার যখনই তোমাদের দরকার হবে পাথর আমরা ফেরত নিব- বাহককে ফেরত দিতে বাধ্য থাকিবে 🙂)

তো সাধারণ মানুষ পাথর নিল এবং নিজেদের মধ্যে পাথরের মূল্যমান অনুযায়ী লেনদেন করতে শুরু করলো। মাছ বিক্রি করে মাছ বিক্রেতা পেলো ২০০ পাথর মুদ্রা। তা থেকে সে ২০ পাথর মুদ্রার তেল, লবণ কিনলো।

এরপর দ্বীপদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক কাগজ ও ছাপার মেশিন সংগ্রহ করে পাথরের বদলে কাগজের টাকা ছাপানো শুরু করলো। 🙂

তাহলে বুঝেছেন,মুদ্রা বা টাকা আসলে কী? কীভাবে আসে বা কীভাবে কাজ করে..

মুদ্রা বা টাকা হলো বিনিময় মাধ্যম। আমরা ছোটবেলায় ম্যাচের প্যাকেট দিয়ে খেলতাম। ঐটাও এক ধরণের মুদ্রা বা বিনিময় মাধ্যম ছিল।

এবার সহজে বুঝবেন ক্রিপ্টোকারেন্সি কী।

ক্রিপ্টোকারেন্সি হলো ডিজিটাল মুদ্রা। বিভিন্ন ধরণের ভিজিটাল মুদ্রা আছে। বিটকয়েন হলো এক ধরণের ডিজিটাল মুদ্রা। এটা আবিষ্কার করেন জাপানের সাতোশি নাকামাতো।

জিনিসটা এরকম, তিনি মোট ২ কোটি ১০ লক্ষের মতো নম্বর ইস্যু করেন। এগুলো হলো ২ কোটি ১০ লক্ষ বিটকয়েন। এরপর এগুলোকে বাজারে ছাড়েন। ধরেন বললো, একটা মুদ্রা ১০০ ডলার দাম। আপনি ৫০০ ডলার দিয়ে ৫ টা বিটকয়েন কিনলেন। এরকম অনেকেই কিনলো। এখন আপনি অনলাইনে কিছু কিনবেন। ক্রেতাকে বললেন, বিটকয়েন নেন আপনি? উনি বললো, নিই। এরপর আপনি বিটকয়েন এর সিস্টেম এ গিয়ে ১০০ বিটকয়েন দিয়ে দিলেন। খুবই সাধারণ পদ্ধতি।

এখন, আসেন বিটকয়েন চলে কীভাবে?
এটা একটা খুবই নিখুঁত ও নিরাপদ সিস্টেম। মুদ্রার সংখ্যা নির্দিষ্ট। নতুন মুদ্রা ইস্যু হয়না। তাই এর দাম উঠানামা করে। ধরেন আপনার কাছে ৫ টা বিটকয়েন আছে। পাঁচটা বিটকয়েন মানে পাঁচটা ইউনিক নম্বর। আপনার একটা ওয়ালেট বা একাউন্ট থাকবে। ঐ ওয়ালেটে এই নম্বরগুলো থাকবে। আপনি যখন আরেকজনকে দুটি বিটকয়েন দিবেন তখন নম্বরগুলো তার ওয়ালেটে বা একাউন্টে (পিয়ার টু পিয়ার) চলে যাবে।

সাধারণ মুদ্রার সাথে পার্থক্য হলো, সাধারণ মুদ্রা ইস্যু করে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিটকয়েন এ এরকম কোন কর্তৃপক্ষ নেই। সিস্টেম ই এটা রান করায়। সাধারণ লেনদেনের তথ্য অন্যেরা পেতে পারে, বিটকয়েন এর লেনদেনের তথ্য অন্য কারো পক্ষে পাওয়া সম্ভব না। বিটকয়েন অনেক দেশে এখনো অনুমোদিত নয়।

হ্যাপি লার্নিং 🙂

Share this Article:

Facebook
Twitter
LinkedIn